হিলিয়াম | |||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
উচ্চারণ | /ˈhiːliəm/ | ||||||||||||||||||||
নাম, প্রতীক | হিলিয়াম, He | ||||||||||||||||||||
উপস্থিতি | Colorless gas, exhibiting an red-orange glow when placed in a high voltage electric field | ||||||||||||||||||||
পর্যায় সারণিতে হিলিয়াম | |||||||||||||||||||||
| |||||||||||||||||||||
পারমাণবিক সংখ্যা | ২ | ||||||||||||||||||||
আদর্শ পারমাণবিক ভর | 4.002602(2) | ||||||||||||||||||||
মৌলের শ্রেণী | নিষ্ক্রিয় গ্যাস | ||||||||||||||||||||
গ্রুপ | গ্রুপ ১৮;18 (নিষ্ক্রিয় গ্যাস) | ||||||||||||||||||||
পর্যায় | পর্যায় ১ | ||||||||||||||||||||
ব্লক | s-block | ||||||||||||||||||||
ইলেকট্রন বিন্যাস | 1s2 | ||||||||||||||||||||
প্রতিটি কক্ষপথে ইলেকট্রন সংখ্যা | 2 | ||||||||||||||||||||
ভৌত বৈশিষ্ট্য | |||||||||||||||||||||
দশা | গ্যাস | ||||||||||||||||||||
গলনাঙ্ক | (at 2.5 MPa) 0.95 কে (−272.20 °সে, −457.96 °ফা) | ||||||||||||||||||||
স্ফুটনাঙ্ক | 4.22 K (−268.93 °সে, −452.07 °ফা) | ||||||||||||||||||||
ঘনত্ব | 0.1786 গ্রা/লি (০ °সে-এ, ১০১.৩২৫ kPa) | ||||||||||||||||||||
তরলের ঘনত্ব | m.p.: 0.145 g·cm−৩ | ||||||||||||||||||||
পরম বিন্দু | 5.19 কে, 0.227 MPa | ||||||||||||||||||||
ফিউশনের এনথালপি | 0.0138 kJ·mol−১ | ||||||||||||||||||||
বাষ্পীভবনের এনথালপি | 0.0829 kJ·mol−১ | ||||||||||||||||||||
তাপ ধারকত্ব | 5R/2 = 20.786 J·mol−১·K−১ | ||||||||||||||||||||
বাষ্প চাপ (defined by ITS-90)
| |||||||||||||||||||||
পারমাণবিক বৈশিষ্ট্য | |||||||||||||||||||||
তড়িৎ-চুম্বকত্ব | no data (পলিং স্কেল) | ||||||||||||||||||||
সমযোজী ব্যাসার্ধ | 28 pm | ||||||||||||||||||||
ভ্যান ডার ওয়ালস ব্যাসার্ধ | 140 pm | ||||||||||||||||||||
বিবিধ | |||||||||||||||||||||
কেলাসের গঠন | hexagonal close-packed (hcp) | ||||||||||||||||||||
শব্দের দ্রুতি | 972 m·s−১ | ||||||||||||||||||||
তাপীয় পরিবাহিতা | 0.1513 W·m−১·K−১ | ||||||||||||||||||||
চুম্বকত্ব | diamagnetic[১] | ||||||||||||||||||||
ক্যাস নিবন্ধন সংখ্যা | 7440-59-7 | ||||||||||||||||||||
হিলিয়ামের আইসোটোপ | |||||||||||||||||||||
| |||||||||||||||||||||
হিলিয়াম (ইংরেজি: Helium, গ্রিক: ἥλιος হ্যালিওস্ "সূর্য" থেকে) পর্যায় সারণির ২য় মৌল। এর প্রতীক He। এটি পর্যায় সারণি ১ম পর্যায়ের শূন্য গ্রুপ-২ এ অবস্থিত। ভরের দিক দিয়ে এটি দ্বিতীয় হালকা মৌলিক পদার্থ। একমাত্র হাইড্রোজেন এর চেয়ে হালকা। হিলিয়াম একটি বর্ণহীন, গন্ধহীন এবং স্বাদহীন নিষ্ক্রিয় গ্যাস। এই মৌলিক পদার্থের পারমাণবিক সংখ্যা ২।
১৮৬৮ খ্রিষ্টাব্দে ফরাসি জ্যোতির্বিজ্ঞানী পিয়ের জনসেন ভারতের গুন্টুরে একটি সূর্যগ্রহণের সময় সূর্যের জ্যোতির্বলয়ের বর্ণালীতে হিলিয়াম আবিষ্কার করেন। এর কিছুদিন পরেই এটি একটি মৌল হিসেবে চিহ্নিত হয়। ব্রিটিশ রসায়নবিদ স্যার এডওয়ার্ড ফ্র্যাংকল্যাণ্ড এবং স্যার জোসেফ নরম্যান লকইয়ার এটির নাম দেন হিলিয়াম। ব্রিটিশ রসায়নবিদ স্যার উইলিয়াম র্যামজে প্রথম পৃথিবীতে প্রাপ্ত পদার্থ থেকে এটি নিষ্কাশন করেন। তিনি ক্লিভাইট নামে একটি ইউরেনিয়াম খনিজে হিলিয়াম শনাক্ত করেন। ১৯০৭ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ রসায়নবিদ স্যার আর্নেস্ট রাদারফোর্ড দেখান যে আলফা কণা হল হিলিয়ামের নিউক্লিয়াস।
হিলিয়াম একটি এক পরমাণুবিশিষ্ট অণু। অর্থাৎ এর একটি অণুতে একটিমাত্র পরমাণু থাকে। মৌলসমূহের মধ্যে কেবল হাইড্রোজেন এর চেয়ে হালকা। হিলিয়াম -২৭২.২ ডিগ্রী সেলসিয়াসে ২৬ একক বায়ুমণ্ডলীয় চাপেরও বেশি চাপে জমে কঠিন হয়। এটি -২৬৮.৯ ডিগ্রী সেলসিয়াসে ফুটতে শুরু করে। এর ঘনত্ব ২০ ডিগ্রী সেলসিয়াসে ও একক বায়ুমণ্ডলীয় চাপে ০.১৬৬৪ গ্রাম/লিটার। হিলিয়ামের আণবিক ভর ৪.০০২৬।
সব গ্যাসের মধ্যে হিলিয়াম গ্যাসকে তরল করা সবচেয়ে কঠিন। স্বাভাবিক বায়ুচাপে একে কঠিনীভূত করা অসম্ভব। এই বৈশিষ্ট্যের কারণে তরল হিলিয়াম হিমায়ক হিসেবে এবং পরীক্ষণে পরম শূন্যের কাছকাছি তাপমাত্রা উৎপাদনে ও পরিমাপে ব্যবহার করা হয়। তরল হিলিয়ামের উপরের বাষ্প দ্রুত সরিয়ে নিয়ে একে স্বাভাবিক বায়ুচাপে প্রায় পরম শূন্যের কাছাকাছি তাপমাত্রায় শীতল করা সম্ভব। পরম শূন্যের সামান্য উপরের তাপমাত্রায় হিলিয়াম ২ বা অতিতরল হিলিয়ামে পরিণত হয়। এই অতিতরল হিলিয়ামের অদ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান; এর কোন হিমাংক নেই, এবং এর সান্দ্রতা শূন্য। এটি খুব সহজেই অত্যন্ত সূক্ষ্ম ছিদ্র ও ফাটলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে যেতে পারে। হিলিয়াম-৩ নামের ৩ ভরবিশিষ্ট আইসোটোপটির স্ফুটনাংক সাধারণ হিলিয়ামের চেয়েও নিচে অবস্থিত এবং তরল অবস্থায় অত্যন্ত ভিন্ন রকম আচরণ করে।
হাইড্রোজেনের পরেই হিলিয়াম মহাবিশ্বের সবচেয়ে সহজলভ্য মৌল। কিন্তু পৃথিবীতে এর পরিমাণ অত্যন্ত কম। ভূগর্ভস্থে প্রাকৃতিক গ্যাসের সাথে মিশ্র অবস্থায় একে পাওয়া যায়। অত্যন্ত হালকা বলে নিঃসরণের পর এটি বায়ুমণ্ডল ত্যাগ করে তাই এই গ্যাসটিকে আর ধরে রাখা যায় না। সমুদ্র সমতলে হিলিয়াম প্রতি দশ লক্ষ ভাগে ৫.৪ ভাগ পাওয়া যায়। উচ্চ উচ্চতায় এই পরিমাণ খানিকটা বাড়ে। বায়ুমণ্ডলের প্রতি দশ লক্ষভাগে একটি হিলিয়াম-৩ মৌল কণা থাকে। অনুমান করা হয় যে এটি ৩ ভরবিশিষ্ট ট্রিটিয়ামের তেজস্ক্রিয় ক্ষয় থেকে তৈরি । হিলিয়ামের সাধারণ আইসোটোপ, হিলিয়াম-৪ সম্ভবত শিলাসমূহের তেজস্ক্রিয় আলফা কণা নিঃসরণের থেকে উদ্ভূত। প্রাকৃতিক গ্যাস হিলিয়ামের প্রধান বাণিজ্যিক উৎস। এতে প্রায় ০.৪ শতাংশ হারে হিলিয়াম থাকে।
হিলিয়াম অদাহ্য বলে বেলুনে হাইড্রোজেন গ্যাসের বদলে এটি ব্যবহার করা হয়। এর উত্তোলন ক্ষমতা হাইড্রোজেনের ৯২ শতাংশ, তবে এটি হাইড্রোজেন অপেক্ষা দ্বিগুণ ভারী।
অন্যান্য নিষ্ক্রিয় গ্যাসের মত হিলিয়ামও রাসায়নিকভাবে নিষ্ক্রিয়। এর একমাত্র ইলেকট্রন খোলসটি ইলেকট্রনে পূর্ণ। ফলে অন্যান্য রাসায়নিক মৌলের সাথে এর বিক্রিয়া হওয়া অত্যন্ত দুরূহ। বিক্রিয়া ঘটলেও, উৎপন্ন যৌগগুলি অস্থায়ী প্রকৃতির হয়ে থাকে। হিলিয়ামের সাথে নিয়ন এবং হাইড্রোজেনের যৌগের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া গেছে। অন্যান্য যৌগও প্রস্তাবনা করা হয়েছে। মহাবিশ্বে হিলিয়াম অত্যন্ত সহজলভ্য বলে এই বিক্রিয়াগুলি মহাবিশ্ব তত্ত্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।