জেরার মুরু | |
---|---|
জন্ম | জেরার আলবের মুরু ২২ জুন ১৯৪৪ আলবেরভিল, ফ্রান্স |
পেশা | বিজ্ঞানী |
পরিচিতির কারণ | সুতীক্ষ্ণ স্পন্দন বিবর্ধন |
পুরস্কার | পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার (২০১৮) |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | একোল পলিতেকনিক এনস্টা প্যারিস টেক রচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় |
জেরার আলবের মুরু (ফরাসি: Gérard Albert Mourou; ফরাসি : ; জন্ম ২২ জুন ১৯৪৪) ফরাসি বিজ্ঞানী ও তড়িৎ প্রকৌশলী। তিনি লেজার প্রযুক্তির দুনিয়ায় একজন অগ্রণী ব্যক্তি এবং নোবেল পুরস্কার বিজয়ী। আর্থার আসকিন, ডোনা স্ট্রিকল্যান্ডের সাথে একত্রে নোবেল লাভ করেন। ডোনা ও মুরু সম্মিলিতভাবে সুতীক্ষ্ণ স্পন্দন বিবর্ধন (সিপিএ) কৌশলটি আবিষ্কারের জন্য পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন। এই কৌশলের মাধ্যমে লেজার রশ্মির স্পন্দনের দৈর্ঘ্য ছোট করে এনে এর শক্তি বহুগুণে (টেরাওয়াট মাপনীতে) বাড়িয়ে তোলা হয়। [১] ১৯৪৪ সালে মুরু ও তাঁর সহযোগী গবেষক দল মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ে বায়ুমণ্ডলে টেরাওয়াট তীব্রতার লেসার রশ্মিপটি পৃথকীকরণ ও তনুকরণের (rarefaction) দ্বারা আত্ম-কেন্দ্রীকারী প্রতিসরণ (দেখুন কার ক্রিয়া) ও আত্ম-তনুকারক ব্যবর্তন (self-attenuating diffraction) দ্বারা ভারসাম্য আবিষ্কার করেন। এটি এমন তন্তু (ফিলামেন্ট) সৃষ্টি করেছে যা রশ্মিপটির জন্য তরঙ্গনির্দেশ (ওয়েভগাইড) তৈরী করে এবং এটি বিকিরণকে প্রতিরোধ করে।
মুরু ২০০৫ থেকে ২০০৯ অবধি এনস্তা-র লাবোরাতোয়ার দোপতিকের পরিচালক ছিলেন। তিনি হাট কলেজের অধ্যাপক ছিলেন। ১৬ বছর ধরে শিক্ষকতা করা মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরোত্তর সাম্মানিক (এমেরিটাস) অধ্যাপক ছিলেন। তিনি ১৯৯০ থেকে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের #এন্টার ফর আল্ট্রাফাস্ট অপটিক্যাল সায়েন্সের প্রতিষ্ঠাতাকালীন পরিচালক ছিলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পর ১৯৭৭ সালে রচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হন। সেখানে তিনি এবং তার শিক্ষার্থী ডনা স্ট্রিকল্যান্ড ল্যাবরেটরি ফর লেজার এনার্জেটিক্স প্রতিষ্ঠানে লেজারের উপর গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেন যার দরুন তাঁরা পরবর্তীতে ২০১৮ সালে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।[২] তারা যুগ্নভাবে চার্পড পালস এমপ্লিফিকেশন আবিষ্কার করেন "উচ্চশক্তির অতিসংক্ষিপ্ত অপটিক্যাল পালস" তৈরীর পদ্ধতি।[৩]
২ অক্টোবর ২০১৮ তে, মুরু এবং স্ট্রিকল্যান্ড চার্পড পালস অ্যামপ্লিফিকেশনে যুগ্নভাবে কাজ করার জন্য পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল অর্জন করেন।[৪] "পরমাণু, কণা, ভাইরাসের কোনো ক্ষতি না করে লেজার দিয়ে নাড়াতে সক্ষম অপটিক্যাল টোয়েজার" আবিষ্কারের জন্য একইসাথে নোবেল অর্জনকারী আর্থার আশকিন নোবেল পুরস্কারের মোট অর্থমুল্যের অর্ধেক পাবেন এবং বাকি অর্ধেক মুরু ও স্ট্রিকল্যাণ্ডের মধ্যে সমানভাবে ভাগ হয়ে যাবে।[৫][৬]
মুরু এবং স্ট্রিকল্যাণ্ডের গবেষণার বিষয়বস্তু ছিল কম শক্তির সংক্ষিপ্ত সময়ের পালসকে প্রসারিত করে পালসের শীর্ষ শক্তি কমিয়ে নেওয়া। এরপর কম শক্তির পালস অ্যামপ্লিফাই করে আবার সংকুচিত করা। এভাবে প্রাপ্ত পালসের শক্তি বহুগুণে বৃদ্ধি পায়।[৬] এই কৌশলের কথাই স্ট্রিকল্যাণ্ডের প্রথম গবেষণা প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়। আর এ কৌশলটিই চার্পড পালস অ্যামপ্লিফিকেশন হিসেবে পরিচিত। প্রাকৃতিক ঘটনা নিয়ে গবেষণা করতে তাদের এ আবিষ্কার অদূর ভবিষ্যতে ব্যবহৃত হবে; এবিষয়ে তারা একেবারেই ওয়াকিবহাল ছিলেন না।[৭] সিপিএ দ্বারা যে লেজার পালস তৈরী হয়, তা শুধুমাত্র এক অটোসেকেন্ড (সেকেন্ডের বিলিয়ন-বিলিয়ন ভাগের এক অংশ) স্থায়ী হয়। আর সেই সময়ের মধ্যে শুধুমাত্র রাসায়নিক বিক্রিয়া গুলো নিয়েই গবেষণা করা হয় না বরং প্রতিটা পরমাণুর মধ্যে কী হচ্ছে তাও পর্যবেক্ষণ করা যায়।[৭]
দ্য গার্ডিয়ান এবং সায়েন্টিফিক অ্যামেরিকান স্ট্রিকল্যাণ্ড এবং মুরুর কাজের সারমর্মে উল্লেখ করে বলেন: "এযাবৎকালে সৃষ্ট সবচেয়ে ছোট ও উন্নত লেসার বিম তৈরীর পথ খুলে দিয়েছে"। "অত্যন্ত ছোট, অত্যন্ত তীক্ষ্ণ লেসার বিমের কৌশল বর্তমানে লেসার প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত হবে এবং চিকিৎসকরা লক্ষ লক্ষ" লেসার চক্ষু অস্ত্রোপচার" করতে সক্ষম হবেন।[৮][৯]